রোজা রাখার উপকারিতা: আমরা জানি শরীরের প্রতিটি অঙ্গ পতঙ্গ এবং শিরা উপশিরাগুলো সচল রাখতে খাবারের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু এই খাবারই জদি নিয়মিত এবং পরিণত না হয়। তাহলে শরীরের শক্তি যোগানো পরিবর্তে রোগ সৃষ্টি করে।
স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে অসময়ে অসম ভক্ষণ হজম প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে একমত যে শরীরের অধিকাংশ রোগ সৃষ্টি হয়, অস্বাভাবিক খাদ্য গ্রহণের কারণে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো এই রোগের উপসর্গ ও কারণগুলো হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বহু শতাব্দী পূর্বেই বলে গেছেন। তিনি বলেন আমাদের সকল রোগের কেন্দ্রবিন্দু হলো পেট। অতিরিক্ত খাদ্যাভ্যাস এড়িয়ে চলার রোগের আরোগ্যতা। এই বিবেচনায় রোজা আমাদের আধ্যাত্মিক ও শারীরিকভাবে কিছু বিষয় পরিত্যাগ করার শিক্ষা দেয়। মুসলিমদের জন্য রোজা রাখা ফরজ যে শুধু তাই নয়।
বর্তমান বিজ্ঞানের গবেষণা অনুযায়ী, রোজা রাখার উপকারিতা নিয়ে অবাক করা তথ্য উঠে এসেছে। যে মুসলিমরা হাজার বছর আগে থেকে করে আসছে। নিয়মিত রোজা রাখলে আপনার শরীরে ঘটবে অনেক পরিবর্তন।
চলুন তাহলে জেনে নেই রোজা রাখার উপকারিতা সম্পর্কে বিজ্ঞান কি বলছে।
- নিয়মিত রোজা রাখলে পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে। আপনার লিভার শক্তিশালী হয়ে উঠবে। রোজার ফলে অঙ্গ পতঙ্গ গুলো বিশ্রাম লাভ করে। ফলে শরীরে সঞ্চিত বিষাক্ত পদার্থগুলো দূর হয়ে যায়। অতিরিক্ত ওজনের ফলে দেহে যে টক্সিন তৈরি হয়, তা বায়ুমণ্ডল কে বিষাক্ত করে তোলে। ফলে দেহে এক অস্বাভাবিক রকমের ক্লান্তিবোধ ও জড়তা নেমে আসে।
- রোজা জড়তা কাটাতে সহায়তা করে। আমেরিকান একটি বিশ্ববিদ্যালয় আবিষ্কার করেছে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। মুসলিমরা যেটা হাজার বছর ধরে পালন করে আসছে। সেটা বর্তমান গবেষক দল পূর্ণ আবিষ্কার করেছে। গবেষণার পর এখন তারা বলছে কিছু সময় 16 থেকে 18 ঘন্টা একটি বিরুতি থাকা ভালো। এর ফলে
আপনার সমস্ত রোগ চলে যাবে।
আর এটার অনেকগুলো দিক রয়েছে, যেমন মানসিক-শারীরিক।
- কিন্তু বর্তমান বিশ্বে ক্যান্সারের মতো ভয়ঙ্কর রোগ বেড়েই চলেছে। মূলত ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ মূলত আমাদের সবারই শরীরে রয়েছে। যদি সেই কোষগুলো সব একত্রে সংঘটিত হতে পারে। বা তারা একটা জায়গায় দলবেঁধে বসতি গড়ে তোলে। তবে সেগুলি একজন মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠবে। এই ক্যান্সার কোষ গুলো আমাদের শরীরে নীরবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর কিছু ক্ষতি করছে।
- সাধারণত বাকি কোষ যা খাবার খায় তার তুলনায় ক্যান্সার কোষ 8 থেকে 12 গুণ বেশি খাবার খেয়ে থাকে।
- তাই আপনি যদি নিয়মিত রোজা ও উপোষ থাকেন তাহলে তাদের বেশিরভাগই মারা যাবে। তারা কোনোভাবেই আপনার শরীরে টিকে থাকতে পারবে না। এর জন্য একটা সময় দীর্ঘক্ষন না খেয়ে থাকা ভালো। এটা বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে।
এছাড়াও একজন ব্যক্তির দেহ ও মস্তিষ্ক সবথেকে ভালো কাজ করে।
যখন তার পাকস্থলী খালি থাকে, রোজা যেহেতু মানসিক প্রশান্তি নিয়ে আসে। সেহেতু এসিড নিঃসরণ স্বাভাবিক থাকে।
- রোজায় গ্যাস্ট্রিক আলসারের রোগীরা ভালো থাকে। এক মাসের রোজায় শরীরের ওজন হ্রাস পায়। রক্তে কোলেস্টেরল লেভেল কমে আসে। এছাড়াও করোনারি ধমনী দে সঞ্চিত চর্বি কমতে থাকে, যদি রোজায় চর্বি জাতীয় খাবার কম খাই। ফলে উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ও হার্ট এ্যাটাকের ঝুকি কমে যায়।
- যুক্তরাষ্ট্রের সল্টলেক সিটি তে অবস্থিত হেলথ কেয়ার হার্ড সেন্টারের গবেষণা অনুযায়ী, যেসব হৃদরোগী রোজা থাকার অভ্যাস করেছেন। তারা অন্যান্য হূদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তুলনায় দীর্ঘদিন জীবিত ছিলেন। পাশাপাশি তাদের হৃদযন্ত্র অকেজো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও কমেছে উল্লেখযোগ্যহারে।
বছরব্যাপী অপরিমিত খাদ্য অভ্যাসের কারণে শরীরে যে অতিরিক্ত চর্বি জমে থাকে। তা রোজা রাখার ফলে দূরীভূত হয়।
- স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে মানুষের শরীরে এইচডিএল এবং এলডিএল পাওয়া যায়। এইচডিএল এমন এক ফ্যাট যা বহু রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। এবং এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে তার স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেও ক্ষতিকারক নয়। রোজা রাখার ফলে এইচডিএল-এর পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যায়।
- বিপরীতে এলডিএল যা মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে চরম ক্ষতিকারক। রোজা রাখার ফলে ইউরিক এসিড এবং রক্তে ইউরিয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়। যা শরীরে অধিক পরিমাণে বিদ্যমান থাকলে। স্ট্রক, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের মত রোগের কারণ হয়ে থাকে।
আসল কথা হলো, রোজা কেবল সারাদিন উপোস থেকে নির্ধারিত সময়ে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের নাম নয়।
- বরং এর দ্বারা আল্লাহ তাআলা শারীরিক বহুবিধ রোগ থেকেও আমাদের রক্ষা করেন।
- স্বাস্থ্যবিজ্ঞান মতে রোজা থাকায় ক্ষুধার্থ ও তৃষ্টান্ত থাকার ফলে শরীরের অঙ্গ গুলো স্বাভাবিক হতে থাকে। এবং পাচনতন্ত্রের উন্নতি হয়।
- সেই সাথে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগ যেমন গ্যাস বদহজম লিভারের রোগ, জয়েন্টের ব্যথার ঝুঁকি ইত্যাদি কমে যায়।
বিশ্ব জগতের মহান চিকিৎসক হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন। প্রতিটি বস্তুর যাকাত আছে।
- শরীরের যাকাত রোজা অতএব আমাদের রোজা রাখা উচিত। গ্রীষ্মকালের রোজায় আপনি যদি তৃষ্ণার্ত বোধ করেন।
তাহলে প্রাচীন চিকিৎসকদের গবেষণা অনুসারে,
- আপনি যদি সেহরির সময় ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দুই চামচ খাঁটি মধু পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করেন। তাহলে আপনি সারাদিন প্রাণবন্ত থাকবেন।
- পানি তৃষ্ণা ও কম হবে। কারণ মধুর মত বরকতময় খাবার এবং চিকিৎসা মাল্টিভিটামিন এর খনিজ হওয়ার কারণে এটি রোজার সময় শারীরিক শক্তির পুনরুদ্ধার করে থাকে।
আশাকরি রোজা রাখার উপকারিতা আপনি সবার সাথে শেয়ার করে জানিয়ে দেবেন। আজ এই পর্যন্তই রোজা রাখুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
Post a Comment
0Comments