কোনরকম তারের সংযোগ ছাড়াই জ্বলবে বৈদ্যুতিক বাতি কিংবা ঘরের অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স। বিষয়টি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মনে হলেও এমন আবিষ্কার বাস্তবে সম্ভব হয়েছে। ওয়াইফাই এর মত তারহীন এক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আসতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই । তারবিহীন বিদ্যুৎ স্থানান্তরের এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ নিরাপদ।
ওয়াইফাই রাউটার যেভাবে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করে। ঠিক একই রকমভাবে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে বিনা তারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। এই অসাধ্যকে সাধন করেছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান witricity ও বিশ্বের এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় এমআইটিতে witricity যাত্রা শুরু হয়েছিল।
পদার্থ বিজ্ঞানের একদল অধ্যাপক বৈদ্যুতিক শক্তিতে পরিবহনের এক যুগান্তকারী পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এই পদ্ধতিতে কোন ধরনের তারের সাহায্য ছাড়াই দূরবর্তী স্থানে বিদ্যুৎ পরিবহন করা যায়।
witricity মূলত রেজোনেন্স তারবিহীন উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন।
এই প্রযুক্তিতে বাতাসে বিদ্যুৎ ছড়িয়ে দেওয়ার বদলে। বিশেষ চৌম্বক ক্ষেত্রের সাহায্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করা হয়। ভবিষ্যতে তারবিহীন বিদ্যুৎ স্থানান্তর তারবিহীন ইন্টারনেট ব্যবহারের মতোই সহজ হবে।
- সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটলে মোবাইল ফোন পকেটে রেখেই চার্জ দেওয়া সম্ভব হবে।
- তখন ল্যাপটপের জন্য আলাদা চার্জার লাগবে না অথবা টেলিভিশনের সাথে কেউ তার যুক্ত করতে হবেনাঅ
- Witricity কর্মকর্তারা মনে করেন ভবিষ্যতে হালের ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির মতোই ঘরবাড়িতে তারহীন বিদ্যুৎ ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হবে।
- এছাড়াও এই প্রযুক্তি নতুন উদ্ভাবনী চিকিৎসার যন্ত্রপাতি তৈরিতেও কাজে লাগবে।
সাধারণত ধারণা করা হয় ওয়ারলেস চারজিং ইনচার্জ এর চেয়ে প্লাগিং চারজিং এ বেশি সময় লাগে। কিন্তু বাস্তবে নতুন প্রযুক্তি দিয়ে সাধারণ তারের সাহায্যে চার্জিং এর সমান গতি অর্জন করা সম্ভব হবে ওয়ারলেস চারজিং এ।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যবস্থা অনেক কাজে আসবে।
কারন গাড়ির চার্জার গুলো বেশ ভারী এবং ঝামেলাপূর্ণ। এছাড়া অনেকেই প্রতিদিন তাদের গাড়ি চার্জ দিতে ভুলে যান তাদের জন্য witricity হতে পারে মোক্ষম সমাধান।
কারণ এই ব্যবস্থায় গ্যারেজে গাড়ি পার্ক করে রাখলেই অটোমেটিক চার্জ হতে থাকবে। witricity সিইও মনে করেন ওয়ারলেস চারজিং সহজলভ্য বলে অনেকেই ইলেকট্রিক গাড়ি কিনতে আগ্রহী হবে। কোম্পানিটি এখন বেশ কয়েকটি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে কাজ করছে।
ভবিষ্যতে স্বচালিত গাড়ির ব্যাপক প্রচলন হলে। ওয়ারলেস পাওয়ার স্টেশন শনাক্ত করে গাড়ি নিজে নিজেই চার্জ পূর্ণ করে নিবে। তখন গাড়ির মালিককে চার্জ দেওয়ার জন্য আর কোনো বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে না। জনপ্রিয় ইলেকট্রিক কার Tesla মডেলটিতে ইতোমধ্যে চার্জিং এর এই ব্যবস্থা সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
তারহীন বিদ্যুৎ পরিবহনের এই ধারণা
নতুন মনে হলেও বিজ্ঞানী নিকোলাস টেসলা শত বছর আগে এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে গেছেন। বিজ্ঞানীদের সবাইকে বিনামূল্যে তারহীন বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে চেয়েছিলেন। সে উদ্দেশ্যে 1901 সালে নিউইয়র্কের নামে এক বিশেষ ধরনের টাওয়ার তৈরীর কাজ শুরু হয়েছিল। প্রায় 57 মিটার উঁচু এই টাওয়ার এর নাম দেওয়া হয় ওয়ার্ডেন ক্লিপ টাওয়ার। নিকোলা টেসলার পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়ার্ল্ড টাওয়ার এর মত, আরো অনেকগুলো ছোট ছোট টাওয়ার তৈরি করার কথা ছিল। বিশ্বজুড়ে যেগুলো মানুষের কাছে তার ছাড়া বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পারতো। নিকোলা টেসলার সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সবাই উপকৃত হতো। সে ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য আমাদের হয়তো একটি টাকাও খরচ করতে হতো না।
বর্তমান বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবস্থার 60% তথ্য আদান প্রদান করা হয় ওয়াইফাই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ওয়াইফাই এর চেয়ে 100 গুণ বেশি দ্রুতগতিসম্পন্ন তথ্য আদান প্রদানের ব্যবস্থা আবিষ্কার করা হয়েছে।
Related Tech
এই প্রযুক্তির নাম লাইফাই
আলোক তরঙ্গের উপর ভিত্তি করে লাই-ফাই' প্রযুক্তি গড়ে তোলা হয়েছে ।
Post a Comment
0Comments